1. info@dailysatkhirdiganta.online : সাতক্ষীরা দিগন্ত : দৈনিক সাতক্ষীরা দিগন্ত
  2. info@www.dailysatkhirdiganta.online : দৈনিক সাতক্ষীরা দিগন্ত :
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন

অতিবৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় মৎস্য ও কৃষিতে ক্ষতি ৭০০ কোটি টাকা

প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৬২ বার পড়া হয়েছে

 

এস এম আবুল হোসেন, শ্যামনগর উপজেলা প্রতিনিধি

 

 

সম্প্রতি নিম্নচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে সাতক্ষীরায় রোপা আমন, আউশ ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির খেত পানিতে তলিয়ে যায়। একই সঙ্গে ভেসে গেছে ছয় হাজার মৎস্যঘের ও দেড় হাজার পুকুর। এতে মৎস্য ও কৃষি খাতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

 

সাতক্ষীরার আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহের শনি থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত চার দিনে ৯৬ ঘণ্টায় ২৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ।

 

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন দিনের ভারী বর্ষণের কারণে সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার শ্মশানঘাটের পাশের বেতনা নদীর পাউবোর রিংবাঁধ গত রবিবার সন্ধ্যায় ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ সংস্কার করতে ব্যর্থ হয়।

 

বাঁধ ভেঙে বেনেরপোতা, খেজুরডাঙ্গা, গোপীনাথপুর, তালতলা, আহসাননগর, হরিণখোলা, গোয়ালপোতা, গাছা, দক্ষিণ নগরঘাটা, হাজরাতলা, পালপাড়া, গাবতলা, দোলুয়া, নগরঘাটা, রথখোলা, কার্পাসডাঙ্গা, নিমতলাসহ কমপক্ষে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

 

এ ছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার ঘুটেরডাঙ্গী, রামচন্দ্রপুর, লবণগোলা, পাথরঘাটা, দামারপোতা, জিয়ালা, ধুলিহর, বালুইগাছ, ফিংড়ি, ফয়জুল্লাহপুর, দরবেশতিয়া, কোমরপুর, তেঁতুলডাঙ্গী, মাছখোলা, শ্যালেসহ ৩০টি গ্রাম ও পৌর এলাকার অর্ধেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ২০-২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই এলাকাসহ সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকার মাছ ও কাঁকড়ার ঘের তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে পুকুর, আমন ধান ও শাক-সবজির খেত।

 

সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কামরুজ্জামানের ১২০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা তিনটি ঘের ডুবে গেছে। তিনি বলেন, সবকটিতে চাষ করা হয়েছিল সাদা মাছ। বৃষ্টিতে সবকটি ঘের তলিয়ে যাওয়ায় আমার প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

 

আগরদাড়ি ইউনিয়নের কৃষক মো‍ঃআজহারুল ইসলাম আট বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছিলেন। তিনি বলেন, আট বিঘা জমিতে আমার লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। ছয় বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান গাছগুলো পানির নিচে পচে যাচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে সব গাছ মারা যাবে।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ১৪৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে আমাদের ৫ হাজার ৪৫২ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার বাজার মূল্য ৯ কোটি টাকার বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৩৫০ জন কৃষক।

 

মোঃসাইফুল ইসলাম আরও বলেন, বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলবদ্ধতা নিরসন করতে পারলে সেসব জায়গায় কৃষকদের পুনর্বাসিত করে আবার শাক-সবজি ও আগাম খাদ্যশস্য আবাদের দিকে নিতে পারব। আশা করছি আবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারব।

 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আনিছুর রহমান জানান, গত কয়েক দিন ধরে অতিবৃষ্টির কারণে বিশেষ করে শ্যামনগর উপজেলা ও সাতক্ষীরা সদরের বেতনা নদীর একটা অংশ ভেঙে যাওয়ায় তার আশপাশের ঘেরগুলো একেবারে পানির সাথে মিশে গেছে। এখানে ৫ হাজার ২৩০ হেক্টর এরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে ঘেরের অধিকাংশ মাছ।

 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মৎস্য চাষীদের ৬০০ কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৪ কোটি টাকার বেশি। সহজ শর্তে ঋণ কিংবা প্রণোদনের আওতায় আনা গেলে চাষিরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© দৈনিক সাতক্ষীরা দিগন্ত
ওয়েবসাইট ডিজাইন : ইয়োলো হোস্ট