মোঃ শাহিন মৃধা, উপকূলীয় প্রতিনিধী;
পটুয়াখালীর দুমকিতে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ দখল করে বসতঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের চরবয়েড়া এলাকায় অবস্থিত হনুফা-নূরআলী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্কুলটির জমিদাতা পরিবারের ওয়ারিশগণের দাবি, প্রতিপক্ষের একটি চক্র প্রকাশ্যে দিবালোকে বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করে জবরদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. কামরুজ্জামান হাওলাদার গতকাল শুক্রবার সকালে প্রেসক্লাব দুমকির হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে অবৈধ দখল উচ্ছেদে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কামরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, রাজাখালী মৌজার জেএল-২৬, এসএ ৭৭নং খতিয়ানের জমির রেকর্ডীয় মালিক ইয়াসিন মৃত্যুবরণ করার পর, ওয়ারিশগণ ২০০৯ সালের ৮ মার্চ ১৪৪নং কবলা দলিলের মাধ্যমে ২০ শতক জমি স্কুলের জন্য রেজিস্ট্রি করেন। এই জমিতে ৮৫ ফুট দীর্ঘ ও ১৮ ফুট প্রস্থের স্কুল ভবন নির্মাণ করে নিয়মিত শিক্ষাদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের নিস্পত্তির জন্য বর্তমানে একটি দেওয়ানি মামলাও পটুয়াখালী সিভিল আদালতে চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চলমান মামলার মধ্যেই গত ১৭ জুন রাতে প্রতিপক্ষ রাকিবুল ইসলাম নয়ন ও মুসা গংরা স্কুলমাঠে ছাপড়াঘর তুলতে শুরু করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি থানা পুলিশ ও শিক্ষা অফিসকে জানায়। পুলিশ গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসার নির্দেশ দেয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ বারবার স্থানীয় শালিস অমান্য করে জবরদখলের চেষ্টা অব্যাহত রাখে।
সবশেষ গত ২৪ জুলাই প্রতিপক্ষ স্কুলের লাইব্রেরীর তালা ভেঙে ভেতরে থাকা মালামাল সরিয়ে ফেলে এবং স্থাপনা নির্মাণের উপকরণ রেখে লাইব্রেরী কক্ষটিকে নিজেদের স্টোররুম হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। স্কুলের স্টিলের আলমিরা ভেঙে সব নথিপত্র সরিয়ে ফেলা হয়। চেয়ার-টেবিলের একাংশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিছু ভাঙচুর করা হয়েছে। এমনকি স্কুল ঘরের টিনও খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং স্কুল প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে ভয় পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত রাকিবুল ইসলাম নয়ন বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের পৈতৃক সম্পত্তিতে জোর করে স্কুল স্থাপন করেছিল।এখন আমরা আমাদের জায়গার দখল বুঝে নিচ্ছি, এটিই স্বাভাবিক।”
এ বিষয়ে এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।