মোঃ জিয়াউর রহমান জুয়েল মৃধা,নির্বাহী পরিচালক
পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার আরজবেগী গ্রামের মৃত আঃ মজিদ খানের মেয়ে তিন সন্তানের জননী মোসাঃ মাকসুদা বেগমকে জোর পূর্বক ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ, অবৈধ গর্ভপাত, বসতঘরে চুরি এবং মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি সহ বিভিন্ন অত্যাচারের বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী নারী।
আজ শনিবার দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী তার উপর ঘটে যাওয়া এ সকল অন্যায় অত্যাচারের বিচার দাবী করেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার গর্ভের ৩টি সন্তানসহ আমি আমার নানা বাড়ী ঘড় করে বসবাস করি। আমার স্বামী নাই। আমার বড় ছেলে ঢাকাতে চাকুরী করে ও অন্য ২ ছেলে মাদ্রাসায় হাফেজী পড়ে। আমি বাড়ীতে অধিকাংশ সময়ই একা বসবাস করি। সেই সুবাদে আমার বাড়ীর পাশে আবু বক্কর মুন্সী, পিতা- আঃ রব মুন্সী সম্পর্কে আমার দূর সম্পর্কের মামাতো দুলা ভাই হয়। সে কারনে-অকারনে আমার বাড়ী আসত এবং আমাকে নানান ভাবে প্রেম নিবেদন করতো, আমি আমার দুলা ভাই আবু বক্কর মুন্সীকে বাড়ী আসতে নিষেধ করি। আমি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হইলে সরাসরি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আবু বক্কর মুন্সী একজন অসৎ চরিত্রের লোক, তিনি আইন কানুন, বিচার ব্যবস্থা কিছুই মানে না। তিনি করতে পারে না এমন কোন কু-কর্ম নাই। গত ০১.১০.২০২৩ তারিখ রাত্রে আমি আমার ঘরে একা ঘুমাই। রাতে আবু বক্কর মুন্সী আমার ঘরের দরজা খুলে আমার ঘরে প্রবেশ করে। আমি তখন ঘুমে। আমি ঘুমন্ত অবস্থায় আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধর্ষন করে, আমি উপায়হীন হয়ে ইজ্জতের ভয়ে ও জীবনের ভয়ে সব কিছু মেনে নেই এবং তাহার পাশবিক অত্যাচারে আমি অসুস্থ হয়ে পরি এবং ২৮.১০.২০২৩ তারিখ আমি আবু বক্কর মুন্সীর সাথে ডাক্তার দেখানোর জন্য পটুয়াখালী এসে হোটেল ছোয়ায় উঠি এবং ০২.১১.২০২৩ তারিখ পর্যন্ত হোটেল ছোয়ায় থাকি। ঐ সময় সে বিয়ের প্রলোভনে আমাকে একাধিকবার ধর্ষন করে এবং গোপনে আমার নগ্ন ছবি তুলে রাখে। আমি গর্ভবর্তী হয়ে পরি। তখন আমি আবু বক্কর মুন্সীকে বিয়ের কথা বলি। তখন সে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন মাধ্যমে শালিসীর ব্যবস্থা হয়, তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে পরিক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার কথা বলেন, সেই মোতাবেক আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই এবং আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোড় পূর্বক আমার এ্যাভোশন করায়। পরবর্তীতে আমি বিয়ের কথা বললে তার মোবাইলে ধারণ করা নগ্ন ছবি নেটে ছাড়িয়া দিবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে আমার মা- মামা সহ আমার আত্মীয় স্বজন আমার বিয়ের ব্যাপারে আবু বক্কর মুন্সীর সাথে আলোচনা করলে তিনি বিবাহ করিবে না বলে সাব জানিয়ে দেয়। তখন আমি নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে ৩৭/২০২৪ নং মামলা করিলে আবু বক্কর মুন্সী উক্ত মামলায় জেল হাজতে যায়।
হাজতে বসে তাহার আত্মীয় স্বজন দ্বারা আমার নিকট বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং জামিনে বের হওয়ার পর আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাকে বিয়ে করবে বলে তার আত্মীয় স্বজন আমাকে বলিলে আমি জামিনে বের করি। জামিনে বের হইয়া বাড়ীতে আসিয়া আমাকে বিবাহ করিবেন না বলে ঘোষণা করেন এবং আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানান ভাবে হুমকি দেওয়া আরম্ভ করে। আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে খুন করার হুমকি দেয়। তখন আমি দশমিনা থানায় সাধারণ ডায়েরী করি। ১৭.০৪.২০২৫ তারিখ আমি আমার বসতঘর তালাবন্ধ করে আমার বোনের ননদের বাড়ীতে অসুস্থ রোগী দেখতে যাই। ১৯.০৪.২০২৫ তারিখ আমি বাড়ীতে এসে দেখি আমার পিছনের দরজা ভাঙ্গা। আমি ঘড়ে ঢুকে দেখি আমার ট্রাংকের তালা ভাঙ্গা। ট্রাংকে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণ-অলংকার, জমির দলিল পত্র নিয়ে গেছে। এরপর আমি দশমিনা কোর্টে মো. আবু বক্কর মুন্সি (৪০), হেমায়েত খলিফা(৪০), মো. চান মিয়া খান(৪০) ও সাখাওয়াত হোসেন (৩০) সহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে চুরির মামলা দায়ের করি। যার সি আর মামলা নং- ১৩০/২০২৫।
গত ০৩.০৫.২০২৫ তারিখ রাত অনুমান ২ টার সময় আমার ঘরের জানালা দরজায় পিটানোর শব্দ পেয়ে ঘুম হতে উঠে লাইট জ্বালাইলে ঘর চুরি মামলার সকল আসামীকে দেখতে পাই এবং আমি ডাক-চিৎকার দিতে থাকি। আমার চিৎকারে ঘটনাস্থলে লোকজন এলে আসামীগণ আমাকে দাবাইয়া ধমকাইয়া চলে যায়।
আমি আবু বক্কর মুন্সীর নামে মামলা করার পর আমাকে এলাকার নানান লোকজন দ্বারা হুমকি দিচ্ছে। যে কোন সময় আমার আবু বক্কর মুন্সীর দ্বারা চরম ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। আমার মামলার বিবাদীগন ক্ষমতার অপব্যবহার করে। প্রশাসনও ক্ষমতার কাছে জিম্মি। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের নিকট ন্যায় বিচারের প্রার্থনা করছি।