বেনাপোল প্রতিনিধি।
কাজের সন্ধানে ভারত গিয়ে আটক, তারপর দুই বছর জেল খেটে দেশে ফিরেছেন পাঁচ বাংলাদেশি। রোববার সন্ধ্যায় তাদের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হস্তান্তর করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের শেল্টারহোমে থাকার পর মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
খুলনার রূপসা উপজেলার রফিক জানান, তিনি দালালের মাধ্যমে ২০২২ সালে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত দিয়ে অবৈধপথে ভারতে যান। সেখান থেকে কেরালা রাজ্যের চেরাই এলাকায় অবস্থান নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরার কাছ করতেন। প্রতিদিন ৫০০ রুপি মজুরির পাশাপাশি মাছের থেকে কমিশন পেতেন। এ বাবদ সপ্তাহে আরও প্রায় ২০ হাজার রুপি আয় হতো। সে হিসাবে মাসে আয় হওয়ার কথা ৭০-৮০ হাজার রুপি।
রফিক বলেন, কিন্তু কপালে সুখ বেশিদিন সইলো না। মাত্র ১৮ দিনের মাথায় কেরালা পুলিশের হাতে ধরা পড়লাম। দুই বছরের জন্য সোজা ত্রিশুর ভিয়ের সেন্ট্রাল জেলে যেতে হলো।
কেরালা পুলিশের হাতে আটক হন রফিকের এলাকারই শাহীন শিকদার, তার স্ত্রী এবং শিশুপুত্র। তারা আটক হয়েছিলেন নর্থ পারুনের ভাড়া বাড়ি থেকে। সেসময় তার স্ত্রী দুই মাসের সন্তানসম্ভবা ছিলেন। তাদেরও দুই বছরের জেল দিয়ে ত্রিশুর ভিয়ের জেলখানায় পাঠানো হয়। শিশুপুত্রকে পাঠানো হয় একটি শেল্টারহোমে। জেলখানাতেই দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেন শাহীনের স্ত্রী।
রফিক জানান, কেরালায় অনেক বাংলাদেশির অবস্থান। তারা মাছ ধরা, ভাংগাড়ির কারবারসহ নানা ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। এদের অনেকে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, আবার কেউ কেউ পাসপোর্ট, ভিসা করেই সেখানে গেছেন। তবে, সবাই কোনো না কোনো দালালের মাধ্যমে যান। এসব দালাল বাংলাদেশিদের স্থানীয় ‘মহাজনদের’ জিম্মায় দিয়ে অর্থ উপার্জন করেন। সেই মহাজন বাংলাদেশিদের নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত করে লাভবান হন। বাংলাদেশিরাও বাড়তি রোজগার করেন।
রফিক ২০১৮ সালে প্রথম ভারতে গিয়েছিলেন পাসপোর্ট-ভিসা করেই। তিনি তিন মাস তিন মাস করে সেখানে অবস্থান করে কাজ করতেন। এরপর ফিরে এসে কয়েকদিন পর ফের যেতেন। পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে দালালের মাধ্যমে ২০২২ সালে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করেন।