শহিদুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রতিনিধি।
এক কন্যা সন্তান রেখে স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন চা দোকানি মো. হানিফ মিয়া। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল (তারিখ দিন) রাত আনুমানিক ১২টার দিকে হানিফের স্ত্রী রোজিনাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান একই গ্রামের মো. লিয়াকত আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম।
উভয়ের বাড়িই জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উত্তর ভাতখাওয়া গ্রামে।
জানা যায়, হানিফ ও রোজিনার ১০ বছরের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অপরদিকে রফিকুল ইসলামও বিবাহিত এবং তারও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত তিন বছর ধরে রোজিনার সঙ্গে রফিকুলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের গভীরতায় তারা একে অপরকে ছাড়া বাঁচতে না পারার অজুহাতে এক পর্যায়ে কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকায় পালিয়ে যায় এবং সেখানে এক সপ্তাহ অবস্থান করে।
পরবর্তীতে হানিফ সামাজিক দায়িত্ব ও কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্ত্রী রোজিনাকে ফেরত নিয়ে আসেন। সংসার রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও রোজিনা রফিকুলকে ভুলতে পারেননি। আবারও যোগাযোগ শুরু হয় তাদের মধ্যে। অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নেন একসঙ্গে ঘর বাঁধার।
গতকাল রাতে রোজিনা স্বামীর বাড়ি ছেড়ে সরাসরি রফিকুলের বাড়িতে গেলে, রফিকুলের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা তীব্র প্রতিবাদ জানান। সাবেক ইউপি মেম্বার মো. মুসলিম ও রফিকুলের বড় ভাইয়ের সহযোগিতায় রোজিনাকে সেখান থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে তাকে রাখা হয় রফিকুলের মামাতো ভাইয়ের বাড়িতে।
অন্যদিকে ঘটনার চাপ সহ্য করতে না পেরে হানিফ বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এখন রোজিনা অবস্থান করছেন এক অজ্ঞাত বাড়িতে। তার কোনো নির্দিষ্ট আশ্রয় নেই, নেই সুরক্ষা। এ নিয়ে গ্রামে নানা গুঞ্জন চলছে। কেউ সহানুভূতি দেখাচ্ছেন, কেউ আবার সুযোগ নিচ্ছেন অসহায় অবস্থার।
এ বিষয়ে এলাকার সুশীল সমাজের অনেকে জানান, “এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এর আগেও উত্তর ভাতখাওয়া গ্রামে এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা সাহস পাচ্ছে।”
স্থানীয়দের দাবি, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। কারণ দুটি পরিবার ধ্বংসের পথে, আর একাধিক শিশুর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে।