মোঃ মেহেদী হাসান সম্পাদক ও প্রকাশক
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে আসার তথ্য সংগ্রহের সময় সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ডাক্তারকে রক্ষা করতে দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নিলেন সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি । কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিক মহল।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি জানান, শহরের নারকেলতলা এলাকার বেসরকারি হাসপাতাল ট্রামা সেন্টারে তথ্য সংগ্রহের সময় হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ হাফিজউল্লাহ সহ তার স্টাফরা যৌথভাবে আমার উপর হামলা চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করো। এসময় রোগীর স্বজনরা ও দৈনিক কালবেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদ তাদের ওপর হামলা চালায়। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ৯ মার্চ বাদী হয়ে সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি ডাক্তার হাফিজুল্লাহ কে প্রধান আসামী করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। হামলার সামগ্রিক ভিডিও ফুটেজ দেখে সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি দায়ের করা মামলাটি রুজু করেছে। যার মামলা নম্বর ১৭,। এদিকে ঘটনার চার দিন পর বুধবার (১২ মার্চ) ডাঃ হাফিজউল্লাহ বাদী হয়ে একটি কাল্প কাহিনী সাজিয়ে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি এবং দৈনিক কাল বেলার সাংবাদিক গাজী ফরহাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ থানায় জমা দেয়। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগটি কোন প্রকার তদন্ত ছাড়া রুজু করেছে ওসি । এর আগে মীমাংসা প্রস্তাব দেন ওসি। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত ছাড়া মামলা হয় তাহলে সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা হারাবে। একটি সত্য ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য ডাক্তারকে রক্ষা করতে ওসি এমন মামলা রেকর্ড করেছে।
তিনি আরও জানান, বুধবার (১২ মার্চ ) সকালে ওসি আমাকে ফোনে করে বিষয়টি মিমাংসা করতে বলেন। আমি রাজি হয়নি। আমার মামলা দায়ের করার দুইদিন অতিবাহিত হলে ডাঃ হাফিজউল্লাহকে রক্ষা করতে পরিকল্পনা করে মামলাটি গ্রহণ করেছে ওসি। বিষয়টি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
এর আগে ১০ মার্চ ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম ডাক্তার হাফিজুল্লাহ ও তার ম্যানেজার জনিসহ ৮জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত ডাক্তার মোঃ হাফিজুল্লাহ সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অর্থপেডিক্স সার্জারীর কনসালটেন্ট এবং সাতক্ষীরা ট্রমা সেন্টারের পরিচালক।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, সাংবাদিকদের উপরে হস্তক্ষেপ এবং লগ্ন হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনার চার দিন পর কাউন্টার মামলা হওয়ায় প্রমাণিত হয় এটি একটি সাজানো ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা। আমি এবার না তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সাতক্ষীরা ক্লিনিক মালিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম বাবলা, আমরা এ বিষয়ে বসেছিলাম। কিভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে মামলার বিষয়টি আমি অবগত নয়। এখানে এ্যাসোসিয়েশনের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শামিনুল হক বলেন, সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি ও ফরহাদের বিরুদ্ধে মামলাটি রুজু করা হয়েছে। ঘটনায় উভয় পক্ষ্যের মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
কোন তদন্ত ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি কোন স্বদত্তর দিতে পারিনি।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে যাচায় বাছায় করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলা হয়েছ। সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে